পেট ব্যথা এবং অ্যাপেনডিসাইটিস (কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ)

অ্যাপেনডিসাইটিস মানে অ্যাপেনডিকস নামক ক্ষুদ্র অঙ্গটির প্রদাহ। এ অ্যাপেনডিকস অঙ্গটি পেটের নাভির ডানদিকে অবস্থিত। এটা দেখতে অনেকটা ওয়ার্ম বা কৃমির মতো এবং এটা খাদ্যনালির বৃহদান্ত্রের অংশ। রোগ প্রতিরোধে এর ভূমিকা আছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এ অঙ্গহানির ফলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না।
https://4.bp.blogspot.com/-SE7Phwc82M0/Vsnz-OnEhaI/AAAAAAAAACI/r4iO8XfhCds/s400/%25E0%25A6%2585%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25A1%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2587%25E0%25A6%259F%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B8.jpg
...
See More
১. ফিকুলিথ (শক্ত মলের নুড়ি) দ্বারা অ্যাপেনডিকসের প্রবেশমুখ বন্ধ হয়ে।
২. হজম না হওয়া খাদ্যের অংশ যেমন টমেটোর খোসা দ্বারা অ্যাপেনডিকসের প্রবেশমুখ বন্ধ হয়ে।
৩. গুঁড়া কৃমির দ্বারা এবং ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে অ্যাপেনডিসাইটিস হতে পারে।

অ্যাপেনডিসাইটিস রোগের লক্ষণ
১. রোগী বলবে, প্রথমে আমার ব্যথা নাভির চারপাশে অথবা পেটের উপরিভাগে শুরু হয়েছিল এবং ২-৩ ঘণ্টা পর এ ব্যথা সরে এসে নাভির ডানপাশে অবস্থান নিয়েছে।
২. হাঁচি, কাশি দিলে নাভির ডানপাশে ব্যথা হয়।
৩. বমিভাব বা ১-২ বার বমি হতে পারে।
৪. ক্ষুধা নেই।
৫. হালকা জ্বর ভাব।
৬. কনস্টিপেশন এবং কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও হতে পারে।
৭. পরীক্ষা করলে নাভির ডানদিকে চাপ দিলে ব্যথা অনুভব করবে বা ব্যথার জন্য ধরাই যাবে না। রোগীর ইতিহাস ও লক্ষণগুলো থেকেই ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ নিরূপণ করা হয়। সেই সঙ্গে রক্ত, প্রস্রাব, এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম (মেয়েদের ক্ষেত্রে) করে পেট ব্যথার অন্য কারণগুলো বাদ দিয়ে অ্যাপেনডিসাইটিস রোগ ডায়াগনসিস কনফার্ম করা হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এ রোগ নির্ণয় ছেলেদের তুলনায় কঠিন হয়। কারণ নাভির ডানপাশে ব্যথা মেয়েলী কারণেও হতে পারে। যেমন_ ওভুলেশন পেইন, ডিম্বাশয়ের কারণে ব্যথা, টিউবাল প্রেগনেন্সির (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) জটিলতার কারণে ও প্রস্রাবে ইনফেকশন ইত্যাদির কারণে ব্যথা। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই রোগিণীর ভালোভাবে পূর্ব ইতিহাস ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। প্রয়োজন হলে ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতির সাহায্য নিতে হবে।

চিকিৎসা :দ্রুত অপারেশনই এ রোগের সঠিক চিকিৎসা।

অপারেশন না করলে কী ক্ষতি হতে পারে?
১. চাকা (লাম্পা) হয়ে যেতে পারে। যা কি-না ভালো হতে ২-৩ সপ্তাহ লেগে যায় এবং খরচও অপারেশনের চেয়ে বেশি হয়।
২. ফোঁড়া বা এবসেস হয়ে যেতে পারে।
৩. গ্যাংগ্রিন, ফুটো বা বার্স্ট হয়ে যেতে পারে এবং জীবন-মরণ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. ভালো হয়ে আবার বারবার দেখা দিতে পারে।
অতএব, ওপরের জটিলতাগুলো চিন্তা করে যত দ্রুত সম্ভব অপারেশন করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
Like - Comment - Share 0 0 0