৫ ওয়াক্ত সালাতের পর সম্মিলিত মুনাজাত একটি বিদআত ৷
******************************************************
[ সত্যের পথে, সত্যের সাথে ]
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমাদের দেশের প্রায় বেশিরভাগ মসজিদ গুলোতে ফরয সালাত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈমাম ও মুক্তাদিগনসহ সকলে মিলে হাত তুলে সন্মিলিত মুনাজ করা হয় যা অনেক বড় একটি বিদাআত ৷ এ ধরণের বিদাআত ষ্পষ্ট গুনাহের কাজ এবং সম্মিলিত মুনাজাতের প্রত্যেক হাত উত্তোলনকারী ব্যাক্তি তওবা করে এ পথ থেকে ফিরে না আসলে রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা অনুযায়ী সকলেই জাহান্নামী ৷
...
See More
এ বিষয়ে বিশ্ব বরেণ্য আলেমদের মতামত :-
যেহেতু রাসূল ﷺ থেকে সম্মিলিত মুনাজাতের স্বপক্ষে কোন বিশুদ্ধ হাদীসই পাওয়া যায় না, এ জন্য সাহাবী, তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ীগণের যুগে এর কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ কুসংস্কারের উদ্ভবের পর হক্বপন্থী আলেমগণ বিশুদ্ধ হাদীস সমূহের আলোকে একে বিদআত বলে আখ্যায়িত করেছেন। নিম্নে তাঁদের কয়েকজনের ব্যাখ্যা তুলে ধরা হল :

১৷ শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেন- সালাতের পর ইমাম ও মুক্তাদীগণের হাত তুলে সম্মিলিত দোআ বিদআত। রাসূল ﷺ এর যুগে এটা ছিল না। (মাজমুউল ফাতওয়া ১/১৮৪)

২৷ ইমাম ইবন কাইয়্যিম রহ. বলেন- সালাম ফেরানোর পর কেবলামুখী হয়ে মুক্তাদীদের সাথে মিলে একত্রে দোআ করা রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত নয়। সহীহ বা হাসান কোন সনদেই এর বর্ণনা পাওয়া যায় না। (যাদুল মাআদ ১/৯৩)

৩৷ আল কামুস এর গ্রন্থাকার মাজদুদ্দীন ফিরোজাবাদী বলেন- সালাতের পর ইমাম সাহেবগণ প্রচলিত নিয়মে যে দোআ করেন, রাসূল এর পবিত্র অভ্যাস এ রকম ছিলনা। এ বিষয়ে কোন হাদীসই প্রমাণিত নেই। (সাফরুস সা'আদাহ -পৃষ্ঠা ২০)

৪৷ শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ. বলেন- প্রচলিত দোআ যা অনারব দেশগুলোতে অধিক আর আরব দেশগুলোতে স্বল্পাকারে চালু আছে- অর্থাৎ ইমাম সালাতের পর দোআ করবেন আর মুক্তাদীগণ 'আমীন আমীন' বলবেন, এটি রাসূল ﷺ এর অভ্যাসের অন্তর্ভূক্ত ছিল না এবং কোন সহীহ হাদীস দ্বারা এটি প্রমাণিত নয়। ( শারহ আলাস সিরাতিম মুসতাকিম- পৃষ্ঠা ৯০)

৫৷ আব্দুল হাই লখনভী রহ. বলেন- সালাতের পর হাত উঠিয়ে ইমাম সাহেবের 'রাব্বানা রাব্বানা' বলা আর মুক্তাদীদের 'আমীন আমীন' বলা রাসূল ﷺ এর সময় ছিল না। (মাসমু'আতুল ফাতওয়া- ১/১৬১)

৬৷ পাকিস্তানের গ্রান্ড মুফতী আল্লামা শাফী রহ. বলেন- ফরজ সালাতের পর সুন্নাত হচ্ছে- ইমাম ও মুক্তাদী সকলে একাকী হাদীস বর্ণিত যিকর ও দোআগুলো পড়বে। কিন্তু লোকেরা সুন্নাত বিরোধী সম্মিলিত দোআ আবিষ্কার করে নিয়েছে। (আহকামুদ দোআ- পৃষ্ঠা ১৫)

৭৷ সউদী আরবের গ্রান্ড মুফতী শায়খ বিন বায রহ. বলেন- এ জাতীয় সম্মিলিত দোআ বিদআত। (ফাতওয়া মুহিম্মাহ- পৃষ্ঠা ১০৫)

৮৷ আল্লামা ত্বীবি, ইমাম শাত্বেবী, খলিল আহমাদ সাহারানপুরী, শায়খ ই'যায আলী, ইউসূফ বিন নূরী, আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ. একে বিদআত বলে আখ্যায়িত করেছেন।

৯৷ বাংলাদেশের মুফতীয়ে আ'যম হাটহাজারী শায়খ ফয়জুল্লাহ রহ. উক্ত সম্মিলিত মুনাজাতের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রন্থ রাচনা করে এটি সুন্নাহ বহির্ভূত এবং বিদআত হওয়া প্রমাণিত করেছেন।

বায়তুল্লাহ ও মসজিদে নববীতে নামাযের পর ইমাম সহ সম্মিলিত মোনাজাতের কোন অস্তিত্ব নেই। তাই সকল মুসলিম ভাই ও বোনদের কাছে আমার বিণীত অনুরোধ আসুন আমরা যে কোন ইবাদত করার পূর্বে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে যাচাই করে আমল করবো ইন-শা-আল্লাহ ৷

বিঃদ্রঃ নিজেকে পরিবর্তন করি, আদর্শ পৃথিবী গড়ি ৷ শান্তির জন্য পরিবর্তন আর পরিবর্তনের জন্যই ইসলাম ৷
Like - Comment - Share 1 0 0